কন্যাশ্রী প্রকল্প
প্রকল্পটি কী
১৮ বছরের নীচে যাতে মেয়েদের বিবাহ না হয় সেই দিকে লক্ষ্য রেখে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই প্রকল্প চালু করেছে। গরিব ঘরের মেয়েদের যাতে টাকার অভাবে পড়াশোনা বন্ধ না হয় তা দেখাও এই প্রকল্পের লক্ষ্য। এই প্রকল্প থেকে বছরে এক বার পাঁচশো টাকা করে বৃত্তি পাওয়া যাবে। ১৮ বছর পর্যন্ত বিয়ে না করে থাকলে ও পড়াশোনা চালিয়ে গেলে এককালীন অনুদান পঁচিশ হাজার টাকা পাওয়া যাবে।
কারা বার্ষিক বৃত্তি পাবে
১ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সের মধ্যে এবং পারিবারিক আয়ের সীমা বছরে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বা তার কম, তারা এই বৃত্তি পাবে। শুধুমাত্র বয়সই অনুদান পাওয়ার একমাত্র যোগ্যতা নয়। যে সব মেয়ে অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করছে বা বৃত্তিমূলক শিক্ষায় যুক্ত একমাত্র তারাই এই বৃত্তি পাবে।
কারা এককালীন অনুদান পাবে
অবিবাহিত যে সব মেয়ের ১ এপ্রিল ২০১৩ বা তার পরে বয়স ১৮ বছর কিন্তু ১৯ বছরের কম তারা এই অনুদান পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তবে, তাদের সরকারি বা সরকার অনুমোদিত বিদ্যালয়ের বা মুক্ত বিদ্যালয়ের অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পাঠরতা হতে হবে। অথবা তার সমান কোনও বৃত্তিমূলক\কারিগরি শিক্ষায় নাম লেখানো থাকতে হবে বা প্রশিক্ষণ নিতে হবে। অনুদানগ্রহণকারীর বার্ষিক পারিবারিক আয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার কম হতে হবে। জে.জে হোমে থাকা (জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টের আওতাধীন হোম) মেয়েরা এই অনুদান পেতে পারে কিন্তু বার্ষিক পারিবারিক আয়ের শর্ত তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আবেদনকারীর পিতামাতা শারীরিক ভাবে ৪০ শতাংশ বা তার বেশি অসমর্থ হলে এই শর্ত প্রযোজ্য নয়।
কন্যাশ্রীর জন্য আবেদনপত্র প্রাপ্তির স্থান
সমস্ত মাধ্যমিক - উচ্চমাধ্যিমক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় কন্যাশ্রীর ফর্ম পাওয়া যাবে। মহকুমা শাসকের অফিস, ব্লক অফিসেও এই ফর্ম লভ্য। বিধাননগরের সমাজকল্যাণ দফতরের কমিশনারেট থেকেও ফর্ম তোলা যেতে পারে। কলকাতা পুরসভার কার্যালয়গুলিতেও কন্যাশ্রীর ফর্ম লভ্য। গ্রামাঞ্চলে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, আশা কর্মীদের কাছ থেকেও ফর্ম নেওয়া যেতে পারে। ফর্মের জন্য কোনও দাম লাগে না।
আবেদনপত্রের সঙ্গে কী জমা দিতে হয়
আবেদনপত্র বা ফর্মের সঙ্গে মেয়েটির পাসপোর্ট সাইজের ছবি, বয়সের প্রমাণপত্র, যে প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী তার প্রমাণপত্র, পারিবারিক আয়ের প্রমাণপত্র জমা দিতে হয়।
বয়সের প্রমাণপত্র হিসাবে কী জমা দিতে হবে
মিউনিসিপালিটি বা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে নেওয়া মেয়েটির জন্ম সার্টিফিকেট গেজেটেড অফিসার বা গ্রুপ-এ অফিসার বা এলাকার সাংসদ, বিধায়ক, পঞ্চায়েত প্রধান বা ওয়ার্ড কাউন্সিলারকে দিয়ে প্রত্যয়িত করাতে হবে।
অবিবাহিত হওয়ার প্রমাণপত্র
বৃত্তির জন্য আবেদন করার সময় মা বা বাবা বা অভিভাবক বা মেয়েটি যাঁর কাছে থাকে তিনি একটি ফর্মে লিখে দেবেন যে মেয়েটি অবিবাহিত এবং সেটি গেজেটেড অফিসার বা গ্রুপ - এ অফিসার বা এলাকার সাংসদ, বিধায়ক, পঞ্চায়েত প্রধান বা ওয়ার্ড কাউন্সিলারকে দিয়ে প্রত্যয়িত করাতে হবে। এককালীন অনুদান নেওয়ার সময়ও একই পদ্ধতি অনুসৃত হবে।
পারিবারিক আয়ের প্রমাণপত্র হিসাবে কী দিতে হবে
মা বা বাবা বা অভিভাবক যদি স্বরোজগারী হন তা হলে তিনি লিখে দেবেন কোথা থেকে কত টাকা বছরে রোজগার করেন। কাগজটি গেজেটেড অফিসার বা গ্রুপ - এ অফিসার বা এলাকার সাংসদ, বিধায়ক, পঞ্চায়েত প্রধান বা ওয়ার্ড কাউন্সিলারকে দিয়ে প্রত্যয়িত করাতে হবে।
পারিবারিক আয়ের ক্ষেত্রে কি কোনও ছাড় আছে
মেয়েটি যদি শারীরিক প্রতিবন্ধী হয় অথবা মেয়েটির মা বা বাবা দু’জনেই মারা গিয়ে থাকেন তা হলে আয়ের ক্ষেত্রে ছাড় আছে।
Post a Comment